জাপোরিঝিয়া পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্র এলাকায় রাশিয়া রকেট হামলা চালাচ্ছে বলে অভিযোগ ইউক্রেনের। এ নিয়ে সেখানে ব্যাপক উত্তেজনা বিরাজ করছে। ইউক্রেনের দাবি, রাশিয়া যেভাবে হামলা চালাচ্ছে তাতে যে কোনো সময় একটি পারমাণবিক দুর্ঘটনা ঘটে যেতে পারে। বিদ্যুৎকেন্দ্রটির পরিচালনাকারী সংস্থা জানিয়েছে যে, স্থাপনাটির আশেপাশে গত সপ্তাহ থেকে রকেট হামলা বৃদ্ধি পাওয়ায়, এটি এখন তেজস্ক্রিয়তা ও অগ্নি নির্বাপন ব্যবস্থাপনার মান লঙ্ঘনের ঝুঁকির মধ্যে রয়েছে।
শিনহুয়া জানিয়েছে, পরমাণু বিদ্যুৎকেন্দ্রের নিরাপত্তা নিয়ে উদ্বেগ জানিয়েছেন জাতিসংঘের মহাসচিব অ্যান্তনিও গুঁতেরা। এক বিবৃতিতে তিনি বলেন, আমি উভয় পক্ষের কাছে আহ্বান জানাই যাতে তারা ‘কমন সেন্স’ কাজে লাগায় এবং পরমাণু বিদ্যুৎকেন্দ্রটি ক্ষতিগ্রস্থ হয় এমন কোনো পদক্ষেপ গ্রহণ না করে। জাপোরিঝিয়া প্ল্যান্টের নিরাপত্তা নিশ্চিতে কাজ করছে ইন্টারন্যাশনাল অ্যাটমিক এনার্জি এজেন্সি (আইএইএ)। তাদের চেষ্টার প্রতি পূর্ণ সমর্থন রয়েছে জাতিসংঘের। তিনি ইউক্রেন ও রাশিয়ার প্রতি আহ্বান জানিয়ে বলেন, অবিলম্বে আইএইএ-কে পরমাণু বিদ্যুৎকেন্দ্রটির নিরাপত্তা নিশ্চিতে সেখানে প্রবেশের সুযোগ দেয়া হোক।
এদিকে ভয়েজ অব আমেরিকার খবরে জানানো হয়েছে, এটিই ইউরোপের বৃহত্তম পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্র। বর্তমানে এটি রাশিয়ার দখলে রয়েছে। তবে এর কর্মচারীরা ইউক্রেনীয়।
ইউক্রেনের পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্র পরিচালনাকারী সংস্থা এনেরগোঅ্যাটম বলছে, ওই বিদ্যুৎকেন্দ্রের ভেতরে থাকা নাইট্রোজেন-অক্সিজেন স্টেশন, অভ্যন্তরীণ সুয়ারেজ পাম্প করার স্টেশন, এবং সম্মিলিত সহায়ক ভবনগুলো গোলাবর্ষণে গুরুতরভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এছাড়া, এতে ব্যবহার করার জন্য রাখা শুষ্ক পারমাণবিক জ্বালানী সংরক্ষণগারের আশেপাশে তেজস্ক্রিয়তার মাত্রা পর্যবেক্ষনের তিনটি সেন্সরও ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে বলে জানায় এনেরগোঅ্যাটম। বিদ্যুৎকেন্দ্রটির বাইরে অবস্থিত দমকল বাহিনীর উপরও হামলা চালানো হয়েছে। কর্মকর্তারা আরও জানান যে, একটি বৈদ্যুতিক ট্রান্সফর্মারেও একটি গোলা আঘাত হানে, যার ফলে সারা দেশের বৈদ্যুতিক গ্রিড হুমকির মুখে পড়েছে।
যদিও বিদ্যুৎকেন্দ্রটিতে হামলা চালানোর জন্য রাশিয়া ও ইউক্রেন পরস্পরকে দায়ী করেছে। ইউক্রেনের কর্মকর্তারা বলেছেন, রুশ বাহিনী মারহানেটস শহরে অন্তত ৪০ টি রকেট নিক্ষেপ করেছে। মারহানেটস শহর ঐ বিদ্যুৎকেন্দ্রের পাশের নিপার নদীর অপর পাড়ে অবস্থিত। ঐ বিদ্যুৎকেন্দ্র দখল করে থাকা রুশ বাহিনীর বিরুদ্ধে অভিযোগ রয়েছে যে, তারা ইউক্রেনীয় সেনাবাহিনীর অবস্থানে হামলা চালাতে স্থাপনাটিকে ঢাল হিসেবে ব্যবহার করছে। গত দুই সপ্তাহজুড়ে ঐ বিদ্যুৎকেন্দ্রের আশেপাশের এলাকায় ব্যাপক গোলাবর্ষণ হচ্ছে বলে খবর পাওয়া গিয়েছে।