ঠাকুরগাঁওয়ের পীরগঞ্জ উপজেলার বিভিন্ন সীমান্ত দিয়ে ভারত থেকে চোরা পথে মানহীন গরুর মাংস দেশে আসছে বলে বিজিবি’র পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে। বৃহস্পতিবার দুপুরে উপজেলা পরিষদ সভা কক্ষে উপজেলা আইন শৃংখলা এবং চোরাচালান, সন্ত্রাস ও নাশকতা প্রতিরোধ কমিটির সভায় উপজেলার চান্দেরহাট বিজিবি ক্যাম্পের কোম্পানী কমান্ডার মোফাজ্জল হোসেন এ তথ্য জানান।
সভায় তিনি জানান, ভারতীয় গরুর মাংস পলিথিনে মুড়িয়ে পটলা করে বিজিবি’র চোঁখকে ফাঁকি দিয়ে চোরাকারবারীরা বিভিন্ন সীমান্ত দিয়ে ভারত থেকে বাংলাদেশে আনছেন। মানহীন এসব মাংস গ্রামের সাধারণ মানুষের কাছে কমদামে বিক্রি করা হচ্ছে। এরই মধ্যে ভারত থেকে অবৈধ ভাবে আসা ৬০ কেজি গরুর মাংস জব্দ করেছেন তারা।
বিষয়টি উর্দ্ধতন কর্তৃপক্ষকে জানানো হয়েছে। তারা এটি ঠেকানোর চেষ্টা করছেন কিন্তু জনবল কম হওয়ার কারণে শতভাগ সফল হতে পারছেন না। এ জন্য জনসচেনতা সহ প্রতিরোধ ব্যবস্থা জোড়দার করা আবশ্যক বলে জানান বিজিবি’র ঐ কর্মকর্তা। বিষয়টি নিয়ে সভায় আলোচনা হয় এবং এ বিষয়ে সকলকে সোচ্চার থাকার জন্য প্রশাসনের পক্ষ থেকে আহবান জানানো হয়।
সভায় ঠাকুরগাও-৩ আসনের সংসদ সদস্য হাফিজ উদ্দীন আহাম্মেদ, উপজেলা নির্বাহী অফিসার শাহরিয়ার নজির, পৌর মেয়র বীরমুক্তিযোদ্ধা ইকরামুল হক, থানার অফিসার ইনচার্জ জাহাঙ্গীর আলম, উপজেলা আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদক রেজওয়ানুল হক বিপ্লব, পীরগঞ্জ প্রেসক্লাবের সভাপতি জয়নাল আবেদিন বাবুল সহ সরকারী কর্মকর্তা, ইউপি চেয়ারম্যান ও কমিটির অন্যান্যসদস্যরা উপস্থিত ছিলেন।
এদিকে খোঁজ নিয়ে জানা যায়, ভারত থেকে গরু পাচার বিষয়ে ভারতীয় সীমান্ত রক্ষী বাহিনি (বিএসএফ) সীমান্তে কাড়াকডি ব্যবস্থা নেওয়ায় স্থানীয় বিছু চোরাকারবারী ভারতের চোরাকারবারীদের হাত করে জীবিত গরুর পরিবর্তে এখন জবাই করা গরুর মাংশ ছোট ছোট পটলা করে দেশে আনছেন।
সুত্র জানায়, পলিথিনে মুড়িয়ে ছোট ছোট পটলা করা মাংস কাঁটা তারের উপর দিয়ে ওপার থেকে এপারে ছুড়ে মারা হচ্ছে আর এতে কোন রকম ঝুঁকি ছাড়াই দেশে ঢুকে পরছে মাংস। প্রায় প্রতি রাতেই চান্দেরহাট, রনশিয়া, দানাজপুর, বৈরচুনা, কোচল সহ বিভিন্ন সীমান্তের ফাঁকা এলাকা দিয়ে বাংলাদেশে গুরুর মাংস ঢুকছে। সেই মাংস সীমান্ত এলাকায় সকাল বেলায় সাড়ে চার’শ থেকে ৫’শ টাকা কেজি দরে বিক্রি করছেন চোরাকারবারীরা।
বাজারের গরুর মাংসের দাম বেশি হওয়ায় সাধারন মানুষ ঐ মাংসই বেশি কিনছেন। এ বিষয়ে উপজেলা নির্বাহী অফিসার শাহরিয়ার নজির বলেন, আইন শৃংখলা সভায় বিজিবি বিষয়টি জানিয়েছেন। চোরাই পথে ভারত থেকে আসা গরুর মাংস আদৌ মান সম্মত কিনা এ নিয়ে যথেষ্ট সন্দেহ রয়েছে। এ মাংস যেন কেউ না কেনেন এবং এর সাথে জড়িতদের আইন শৃংখলা বাহিনীর হাতে যেন ধরিয়ে দেন। প্রশাসনের পক্ষ থেকে এ বিষয়ে বিশেষ নজর দেওয়া হবে।