সোমবার, সেপ্টেম্বর ১৬, ২০২৪
২রা আশ্বিন, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

সম্পূর্ণ বিচার না হওয়া পর্যন্ত ফ্যাসিবাদীরা পুনর্বাসনের সুযোগ পাবে না

সম্পূর্ণ বিচার না হওয়া পর্যন্ত ফ্যাসিবাদীরা দেশে পুনর্বাসনের সুযোগ পাবে না। মানবতাবিরোধী অপরাধী হিসেবে তাদের বিচার নিশ্চিত করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে অন্তর্বর্তী সরকার। ফ্যাসিবাদী দল ও জোটকে প্রকাশ্যে কর্মসূচি (পাবলিক প্রোগ্রাম) পালনের ক্ষেত্রেও সরকার নিরুৎসাহিত করবে।

আজ বৃহস্পতিবার অন্তর্বর্তী সরকারের উপদেষ্টা পরিষদের বৈঠক শেষে সংবাদ ব্রিফিংয়ে এসব তথ্য জানান যুব ও ক্রীড়া উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়া।

বিকেলে তেজগাঁওয়ে প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয়ে উপদেষ্টা পরিষদের এই সভায় সভাপতিত্ব করেন প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস। এটা বর্তমান উপদেষ্টা পরিষদের পঞ্চম বৈঠক। ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানের এক মাস পূর্তির দিনে অনুষ্ঠিত উপদেষ্টা পরিষদের এই বৈঠকে বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রীর সরকারি বাসভবন গণভবনকে ‘জুলাই গণ-অভ্যুত্থান স্মৃতি জাদুঘর’ করার সিদ্ধান্ত হয়।

পরে সন্ধ্যায় রাজধানীর হেয়ার রোডে ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে সংবাদ ব্রিফিংয়ে উপদেষ্টা পরিষদের সভার সিদ্ধান্ত জানান যুব ও ক্রীড়া উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়া। এ সময় প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম উপস্থিত ছিলেন।

আসিফ মাহমুদ বলেন, ‘আমরা ইতিমধ্যে পরাজিত ফ্যাসিবাদী শক্তিকে পুনর্বাসন করার জন্য বিভিন্ন কর্মসূচি বিভিন্ন জায়গায় দেখতে পেয়েছি। যেহেতু আমরা ছাত্র-জনতার গণ-অভ্যুত্থানের ভিত্তিতে গঠিত একটি সরকার, আমরা মনে করি, সম্পূর্ণ বিচার নিশ্চিত না হওয়া পর্যন্ত ফ্যাসিবাদীদের পুনর্বাসনের সুযোগ নেই।’

সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে আসিফ মাহমুদ বলেন, ‘ফ্যাসিবাদী যে রাজনৈতিক দল বা রাজনৈতিক জোট বাংলাদেশে যে ফ্যাসিবাদ প্রতিষ্ঠা করেছিল, সম্পূর্ণ বিচার না হওয়া পর্যন্ত তারা রাজনীতি করতে পারবে কি পারবে না, এই প্রশ্ন জনগণের কাছে ছেড়ে দিয়েছি। তবে পাবলিক প্রোগ্রাম (প্রকাশ্য কর্মসূচি) করার ক্ষেত্রে সরকারের পক্ষ থেকে ভাবছি, সেটাকে কীভাবে বাস্তবায়ন করা হবে। সেটি এখনো বিস্তারিত আলোচনা হয়নি। তবে আমরা অবশ্যই নিরুৎসাহিত করব। সম্পূর্ণভাবে বিচারের জন্য ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে, আইন মন্ত্রণালয় কাজ করছে। মানবতাবিরোধী অপরাধী হিসেবে তাদের বিচার নিশ্চিত করা হবে।’ তিনি বলেন, বিচারের বিষয়টি আইন মন্ত্রণালয় দেখছে। কীভাবে বিচার হবে, সে বিষয়ে আইন মন্ত্রণালয় দ্রুত একটি রূপরেখা প্রকাশ করবে।

বৈষম্যবিরোধী ছাত্র-আন্দোলন আওয়ামী লীগকে ফ্যাসিবাদী দল হিসেবে আখ্যায়িত করে আসছে।

আওয়ামী লীগ দল হিসেবে কার্যক্রম চালাতে পারবে কি না, ব্রিফিংয়ে এমন প্রশ্নের জবাবে আসিফ মাহমুদ বলেন, এ বিষয়ে দেশের জনগণ সিদ্ধান্ত নেবে। যেহেতু আওয়ামী লীগ দেশে একটি গণহত্যা ঘটিয়েছে, সেই গণহত্যার দায় নিয়ে তারা কীভাবে ফিরবে বা তাদের ফিরতে দেওয়া হবে কি না, এটি দেশের জনগণ সিদ্ধান্ত নেবে। এটি জনগণের সিদ্ধান্ত।

‘জুলাই গণ-অভ্যুত্থান স্মৃতি জাদুঘর’

উপদেষ্টা পরিষদের বৈঠকে গণভবনকে ‘জুলাই গণ-অভ্যুত্থান স্মৃতি জাদুঘর’ করার সিদ্ধান্ত হয়েছে জানিয়ে উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ বলেন, গণভবন জনগণের জন্য উন্মুক্ত করে দেওয়া হবে। জুলাই গণ-অভ্যুত্থানে শহীদদের স্মৃতি এবং বিগত ফ্যাসিবাদী আমলে যত অন্যায়, অবিচার হয়েছে, তার সবকিছু সংরক্ষণ করার জন্য এটাকে ‘জুলাই গণ-অভ্যুত্থান স্মৃতি জাদুঘর’ হিসেবে প্রতিষ্ঠা করা হবে।

দ্রুতই এ বিষয়ে কার্যক্রম শুরু হবে, জানিয়ে আসিফ মাহমুদ বলেন, গণভবন যে অবস্থায় আছে, জনগণ যেভাবে রেখেছে, সে অবস্থায়ই রাখা হবে। এর মধ্যে ভেতরে একটি জাদুঘর প্রতিষ্ঠা করা হবে। যাতে অভ্যুত্থানের স্মৃতি সংরক্ষিত থাকে। এ বিষয়ে উপদেষ্টা পরিষদের বৈঠকে সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়েছে। তিনি জানান, বিভিন্ন জায়গার অভিজ্ঞতা নিয়ে এই জাদুঘর করা হবে। এ বিষয়ে খুব দ্রুত দৃশ্যমান পদক্ষেপ নেওয়া হবে। গণপূর্ত ও পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় যৌথভাবে কাজটি সম্পন্ন করবে।

থেকে আরও পড়ুন

দেশের রাজনৈতিক দলগুলোকে গোষ্ঠীস্বার্থ নয়, জনগণের আকাঙ্ক্ষার প্রতিনিধিত্ব করতে হবে। কিন্তু নতুন বাংলাদেশে যে...

বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে পুলিশের গুলিতে নিহত রংপুরের বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী আবু সাঈদ হত্যা...

বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রীর সরকারি বাসভবন গণভবনকে ‘জুলাই গণঅভ্যুত্থান স্মৃতি জাদুঘর’ করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে অন্তর্বর্তী সরকার।...

ঢাকার সাভারের আশুলিয়ায় গতকাল বৃহস্পতিবারও শ্রমিক বিক্ষোভ হয়েছে। বিক্ষোভের মুখে গতকাল সেখানে ১২৯টি পোশাক...