সোমবার, সেপ্টেম্বর ১৬, ২০২৪
২রা আশ্বিন, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

ডবলমুরিং থানা জামায়াতের কর্মী সম্মেলন সম্পন্ন

শনিবার ২৪ আগস্ট সন্ধ্যা ৭টায় নগরীর প্রিন্স অব চিটাগং কমিউনিটি সেন্টারে ডবলমুরিং থানা জামায়াতের কর্মী সম্মেলনটি অনুষ্ঠিত হয়।

থানা জামায়াতের আমীর মোহাম্মদ ফারুক আযমের সভাপতিত্বে ও অফিস সম্পাদক সাইফুল ইসলামের সঞ্চালনায় কর্মী সম্মেলনটি শুরু হয়।

গত ১৫ বছরে থানার সবছেয়ে বড় কর্মী সম্মেলন ছিল এটি। এতে প্রায় ১৫ শত কর্মী উপস্তিত ছিল।

থানা আমীরের উদ্ভোদনী বক্তব্যের মধ্য দিয়ে সম্মেলনটি শুরু হয়। এর পর দারসুল কুরআন পেশ করেন মহানগরীর সহকারী সেক্রেটারি অধ্যক্ষ খাইরুল বাসার।

এতে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর কেন্দ্রীয় মজলিসে সূরার সসদ্য, চট্রগ্রাম মহানগরীর আমীর আলহাজ্ব শাহজাহান চৌধুরী।

প্রধান অতিথি তার বক্তব্যে বলেন, চারশত বছর এ বাংলাতে ফিরিঙ্গি, মারাটা, পর্তুগিজ ও ব্রিটিশ বেনিয়ারা শোষণ করেছে। তিনি আওয়ামী লীগকে উদ্দেশ্য করে বলেন, আপনারা ১৫ বছর ক্ষমতায় থেকে ব্রিটিশ বেনিয়াদের কাছ থেকে একটি অর্থও ফিরিয়ে আনতে পারেননাই। জামায়াতে ইসলামী ক্ষমতায় গেলে যা সম্পদ আমাদের কাছ থেকে নিয়ে গিয়েছে আমরা তা কড়ায়-গণ্ডায় ফিরিয়ে আনব।

জামায়াত নিষিদ্ধের ইতিহাস টেনে তিনি বলেন, জামায়াতকে বার বার বেআইনি ভাবে নিষিদ্ধ করা হয়েছিল। আইয়ুব খান নিষিদ্ধ করেছিল টিকতে পারেনাই, শেখ মুজিবও নিষিদ্ধ করে টিকতে পারেনাই। শেখ হাসিনা আপনি ৩১জুলাই প্রজ্ঞাপনের মাধ্যমে জামায়াত নিষিদ্ধ করেছিলেন কিন্তু আল্লাহ তায়ালা ৪ দিনের মাথায় আপনাকে এই দেশ থেকেই নিষিদ্ধ করে বিতারিত করেছেন।

আল্লামা সাঈদির কথা উল্লেখ করে চৌধুরী সাহেব বলেন, এক বছর আগে ১৪ আগস্ট হিন্দুস্তানের পরিকল্পনা অনুযায়ী পিজি হাসপাতালে ইঞ্জেকশন দিয়ে তাকে হত্যা করেছেন। আর এক বছরের মধ্যেই আল্লাহ আপনাকে ও আপনার ইসলাম বিরোধী সন্ত্রাসী দল আওয়ামীলীগকে বাংলাদেশ থেকে বিদায় করেছেন, এরই নাম আল্লামা দেলোয়ার হোসাইন সাঈদী।

গত পনের বছর জামায়াত-শিবির ও বিএনপির ওপর আওয়ামীলীগের অত্যাচার নির্যাতনের কথা উল্লেখ করে তিনি বলেন, শেখ হাসিনা আপনি আমাদের নিরপরাধ ৫ নেতাকে ফাঁসি দিয়ে হত্য করেছেন।

জেলখানায় মৃত্যু হওয়া নেতাদের কথা উল্লেখ করে তিনি বলেন, আমাদের ইমাম আবুহানিফাও স্বৈরাচারের কারাগারে মৃত্যুবরণ করেছেন। সুতরাং আমাদের পথ জান্নাতের পথ, আমাদের পথ রক্তে ভেজা পথ, আমাদের পথ ইসলামী বিপ্লবের পথ, নবী মুহাম্মাদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের রাঙ্গা তলোয়ারের পথ হলো জামায়াতে ইসলামীর পথ।

ইসলামী ব্যাংক ও অন্যান্য ব্যাংক লুটপাটের কথা উল্লেখ করে জামায়াতের সাবেক এই হুইফ বলেন, ১২ টি পরিবার বাংলাদেশের টাকা পাচার করেছে। শেখ হাসিনাও কম করেনাই, কারন তার পিওনেরও ৪০০ কোটি টাকা আছে সে নিজেই স্বীকার করেছে।

ছাত্র আন্দোলনের নেতাকর্মীদের কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করে তিনি বলেন, গত ১৫ বছরে বাংলাদেশ শেষ করে দিয়েছে। এই বাংলাদেশ উদ্দার করার জন্য আমার বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের ভাইয়েরা ২৪ জন কিশোর সহ ৮৭৪ জন জীবন দিয়ে আমাদেরকে নতুন বাংলাদেশ উপহার দিয়েছে।

পরিশেষে তিনি নেতাকর্মীদের উদ্দেশ্যে বলেন, এই নতুন বাংলাকে সাজাতে জামায়াতে ইসলামী ও ইসলামী ছাত্রশিবিরের ভাইদের বেশি করে কাজ করতে হবে।

বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন চট্টগ্রাম মহানগরী জামায়াতের নায়েবে আমীর নজরুল ইসলাম।


বিশেষ অতিথি তার বক্তব্যে বলেন, চট্টগ্রামে আওয়ামী নেতা নওফেল, আজম নাসির ও রেজাউল করিম উত্তেজনা সৃষ্টি করে। এবং তাদের নির্দেশে হেলাল আকবর চৌধুরী এবং যুবলীগ ক্যাডার নুরুল আজিম রনির নেত্বতে ৮ জন অস্ত্রধারী সন্ত্রাসী ছাত্র সমাবেশে হামলা করে ফয়সাল আহমেদ শান্তকে হত্যা করে। তিনি, প্রশাসনের প্রতি দ্রুতই ছাত্রদের হত্যাকারীদের গ্রেফতার করতে ও অস্ত্র উদ্ধারে অভিযান পরিচালনা করার আহবান জানান।

তিনি আরও বলেন, এসকল হামলার সরাসরি নির্দেশ এসেছে শেখ হাসিনা, ওবায়েদুল কাদের, আরাফাত, হাসান মাহমুদ সহ অন্যান্য নেতাদের থেকে। তিনি আরও বলেন, ষড়যন্ত্র থেমে নেই। সকল ষড়যন্ত্র রুখে দেওয়ার জন্য আপনাদের প্রস্তুত থাকতে হবে।

বিশেষ অতিথি হিসেবে আরও উপস্থিত ছিলেন চট্টগ্রাম মহানগরী জামায়াতের সেক্রেটারি অধ্যক্ষ নুরুল আমিন।


তিনি তার বক্তব্যে বলেছেন, আমরা প্রতিহিংসার বশবর্তী হয়ে আইন নিজের হাতে তুলে নেব না। তবে যারা অন্যায় অবিচারের সাথে যুক্ত ছিল দেশের প্রচলিত আইন অনুযায়ী তাদের বিচার হবে, যেখানেই পালিয়ে থাকুক বিচার তাদের হবেই।
তিনি আরও বলেন, ভিন্ন ধর্মাবলম্বী ভাইদের মন্দির পাহারা দেওয়ার মতো এ জাতিকেও পাহাড়া দিতে হবে। তিনি বলেন, এদেশে কোন সংখ্যাগুরু বা সংখ্যালঘু নেই। দেশের সকলকেই দাওয়াত পৌছাতে হবে এবং সম্মিলিত ভাবে এদেশকে একটি কল্যানরাষ্ট্র হিসেবে গঠন করতে হবে।

অপর এক বিশেষ অতিথি ছিলেন মহানগরী জামায়াতের এসিস্ট্যান্ট সেক্রেটারি মুর্শেদুল ইসলাম চৌধুরী।

 

তিনি বলেন, স্বাধীনতা এসেছে বিজয় আসেনি। ষড়যন্ত্রের ঢালপালা এখনও বিরাজমান। চোখ, কান, খোলা রেখে সর্বদা প্রস্তুত থাকতে হবে। যে স্বাধীনতা এসেছে তা যেন বিপন্ন না হয় সেব্যাপারে সচেষ্ট থাকতে হবে।

এতে অতিথিদের মধ্যে আরও উপস্থিত ছিলেন ছাত্র শিবির মহানগরী দক্ষিণের সভাপতি শহিদুল ইসলাম, ডবলমুরিং থানা জামায়াতের নেতৃবৃন্দ, ওয়ার্ড আমীর ও সাংগঠনিক ওয়ার্ড সভাপতি সহ বিভিন্ন পর্যায়ের নেতৃবৃন্দ

থেকে আরও পড়ুন

দেশের রাজনৈতিক দলগুলোকে গোষ্ঠীস্বার্থ নয়, জনগণের আকাঙ্ক্ষার প্রতিনিধিত্ব করতে হবে। কিন্তু নতুন বাংলাদেশে যে...

বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে পুলিশের গুলিতে নিহত রংপুরের বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী আবু সাঈদ হত্যা...

বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রীর সরকারি বাসভবন গণভবনকে ‘জুলাই গণঅভ্যুত্থান স্মৃতি জাদুঘর’ করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে অন্তর্বর্তী সরকার।...

ঢাকার সাভারের আশুলিয়ায় গতকাল বৃহস্পতিবারও শ্রমিক বিক্ষোভ হয়েছে। বিক্ষোভের মুখে গতকাল সেখানে ১২৯টি পোশাক...