back to top
শুক্রবার, অক্টোবর ১৮, ২০২৪

দার্জিলিংয়ে দুই ট্রেনের সংঘর্ষ, নিহত ৮

ভারতের পশ্চিমবঙ্গ রাজ্যের দার্জিলিং জেলায় সোমবার সকালে এক্সপ্রেস ট্রেনের সঙ্গে মালবাহী ট্রেনের সংঘর্ষে তিন রেলকর্মীসহ আটজনের মৃত্যু হয়েছে। আহত হয়েছে প্রায় ৫০ জন। কাঞ্চনজঙ্ঘা এক্সপ্রেস আসামের শিলচর থেকে কলকাতার শিয়ালদহ যাচ্ছিল। এ সময় নিউ জলপাইগুড়ির কাছে অবস্থিত রাঙ্গাপানি স্টেশনের কাছে এ দুর্ঘটনা ঘটে।

দুর্ঘটনায় কাঞ্চনজঙ্ঘা এক্সপ্রেসের বেশ কয়েকটি বগি লাইনচ্যুত হয়েছে বলে জানা গেছে। এতে সীমিত হতাহতের একটি কারণ হলো কাঞ্চনজঙ্ঘা এক্সপ্রেসের পেছনের অংশে কার্গো ভ্যান ও গার্ডের কোচ ছিল। তাই যাত্রীবাহী বগিগুলো সামনের দিকে ছিল।

রেলওয়ে বোর্ডের চেয়ারপার্সন জয়া ভার্মা সিনহা সংবাদমাধ্যমকে জানান, স্থানীয় সময় সকাল ৯টার দিকে দুর্ঘটনাটি ঘটে।

তিনি বলেন, ‘উদ্ধারকাজ সম্পূর্ণ হয়েছে। আহতদের উত্তরবঙ্গ মেডিক্যাল কলেজে স্থানান্তর করা হয়েছে। তাদের সম্ভাব্য সর্বোত্তম চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে।’
তিনি আরো জানান, কাঞ্চনজঙ্ঘা এক্সপ্রেসের সামনের অংশ দুর্ঘটনায় ক্ষতিগ্রস্ত হয়নি।

শিগগিরই এটি আবার যাত্রা শুরু করবে এবং যাত্রীরা গন্তব্যে পৌঁছতে পারবে।
চিকিৎসক ও বিপর্যয় মোকাবেলা দল ঘটনাস্থলে পৌঁছেছে উল্লেখ করে রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেছেন, ‘দার্জিলিং জেলার ফাঁসি দেওয়া এলাকায় এইমাত্র একটি মর্মান্তিক ট্রেন দুর্ঘটনার বিষয়ে জানতে পেরে হতবাক। বিশদ বিবরণের অপেক্ষায় আছি। কাঞ্চনজঙ্ঘা এক্সপ্রেস একটি মালবাহী ট্রেনের সঙ্গে ধাক্কা খেয়েছে বলে জানা গেছে। ডিএম, এসপি, ডাক্তার, অ্যাম্বুল্যান্স ও বিপর্যয় মোকাবেলা দলগুলোকে দ্রুত পাঠানো হয়েছে।

উদ্ধার, পুনরুদ্ধার, চিকিৎসা সহায়তার জন্য দুর্ঘটনাস্থলে কাজ শুরু হয়েছে।’
কাঞ্চনজঙ্ঘা এক্সপ্রেস প্রায়ই পর্যটকরা দার্জিলিং ভ্রমণের জন্য ব্যবহার করে। দুর্ঘটনাটি এমন এক সময় ঘটল, যখন কলকাতা ও প্রতিবেশী দক্ষিণবঙ্গ উত্তাল গ্রীষ্মের তাপে ভুগছে। অনেকে কিছুটা স্বস্তির জন্য পাহাড়ে ভ্রমণ করছে। এখন পর্যন্ত পাওয়া তথ্য অনুযায়ী, মালবাহী ট্রেনটি সিগন্যাল অতিক্রম করে কাঞ্চনজঙ্ঘা এক্সপ্রেসে ধাক্কা মারে।

এদিকে দুর্ঘটনাস্থলের উদ্দেশে রওনা দিয়েছেন রেলমন্ত্রী অশ্বিনী বৈষ্ণব। তিনি এক্সে এক পোস্টে বলেছেন, জরুরি ভিত্তিতে উদ্ধার অভিযান শুরু হয়েছে। এমন দুর্ঘটনা দুর্ভাগ্যজনক। উদ্ধার অভিযান যুদ্ধের পর্যায়ে চলছে। রেলওয়ে, এনডিআরএফ ও এসডিআরএফ নিবিড় সমন্বয়ে কাজ করছে। আহতদের হাসপাতালে স্থানান্তর করা হচ্ছে। ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা ঘটনাস্থলে পৌঁছেছেন।

এ ছাড়া রাষ্ট্রপতি দ্রৌপদী মুর্মু বলেছেন, ট্রেন দুর্ঘটনায় প্রাণহানির খবর ‘গভীর বেদনাদায়ক’। তিনি শোকসন্তপ্ত পরিবারগুলোর জন্য প্রার্থনা করছেন। পাশাপাশি তিনি আহতদের দ্রুত আরোগ্য এবং ত্রাণ ও উদ্ধার অভিযানের সাফল্য কামনা করেন।

প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদিও দুর্ঘটনায় নিহতদের পরিবারের প্রতি সমবেদনা জানিয়েছেন। তিনি বলেন, ‘পশ্চিমবঙ্গে রেল দুর্ঘটনাটি দুঃখজনক। যারা তাদের প্রিয়জনকে হারিয়েছে তাদের প্রতি সমবেদনা। আমি প্রার্থনা করি, আহতরা দ্রুত সুস্থ হয়ে উঠুক। কর্মকর্তাদের সঙ্গে কথা বলেছি এবং পরিস্থিতির পর্যালোচনা করছি। ক্ষতিগ্রস্তদের সহায়তার জন্য উদ্ধার অভিযান চলছে। রেলওয়ে মন্ত্রী দুর্ঘটনাস্থলে যাচ্ছেন।’

অন্যদিকে কংগ্রেস সভাপতি মল্লিকার্জুন খড়গে অভিযোগ করেছেন, নরেন্দ্র মোদির সরকার ‘রেল মন্ত্রণালয়ের সম্পূর্ণ অব্যবস্থাপনায় লিপ্ত হয়েছে’। তার মতে, আজকের ট্র্যাজেডি এই কঠিন বাস্তবতার আরেকটি অনুস্মারক।

সূত্র : এনডিটিভি

আরও পড়ুন:

থেকে আরও পড়ুন