সিলেট সিটি করপোরেশন নির্বাচনে মেয়র পদে আওয়ামী লীগের পদপ্রার্থী মো. আনোয়ারুজ্জামান চৌধুরীর সমর্থনে দল ও সহযোগী সংগঠনের নেতা-কর্মীরা আচরণবিধি ভেঙে প্রতিদিনই নির্বাচনী জনসংযোগ চালাচ্ছেন বলে অভিযোগ উঠেছে।
সিলেট সিটি করপোরেশন নির্বাচনের মাঠ এখন দৃশ্যত আওয়ামী লীগের প্রার্থীর দখলে আছে।
নির্বাচন কমিশনের (ইসি) ঘোষিত তফসিল অনুযায়ী, আগামী ২ জুন প্রতীক বরাদ্দের আগে কোনো ধরনের প্রচারণা চালানো যাবে না।
গতকাল শনিবার আওয়ামী লীগের মনোনীত মেয়র পদপ্রার্থী আনোয়ারুজ্জামান চৌধুরীর সমর্থনে নগরের অন্তত পাঁচটি স্থানে নানা ধরনের নির্বাচনী প্রচারণাকেন্দ্রিক সভা হয়েছে। যুবলীগ, স্বেচ্ছাসেবক লীগ, ছাত্রলীগসহ বিভিন্ন সংগঠনের উদ্যোগে নৌকা প্রতীকের সমর্থনে বিভিন্ন এলাকায় প্রচারণা চালানো হয়।
সন্ধ্যায় নগরের একটি অভিজাত সেন্টার মিলনায়তনে বাংলাদেশ পূজা উদ্যাপন পরিষদ সিলেট মহানগর শাখা এবং হিন্দু বৌদ্ধ খ্রিস্টান ঐক্য পরিষদ মহানগর শাখার নেতা-কর্মীদের সঙ্গে আনোয়ারুজ্জামান চৌধুরী মতবিনিময় সভা করেন। সভায় সভাপতিত্ব করেন আইনজীবী মৃত্যুঞ্জয় ধর। এ সময় আওয়ামী লীগের প্রার্থী নৌকা প্রতীকের সমর্থনে সবাইকে ঐক্যবদ্ধভাবে কাজ করার অনুরোধ করেন।
জানা গেছে, দুই সপ্তাহ ধরে আওয়ামী লীগের মনোনীত প্রার্থী প্রতিদিনই পাঁচ থেকে ছয়টি সভা-সমাবেশে যোগ দিয়ে নির্বাচনী প্রচার-প্রচারণা চালাচ্ছেন। এর বাইরে আওয়ামী লীগ সাংগঠনিকভাবে বিভিন্ন ওয়ার্ডে কর্মিসভা করে সেন্টার কমিটি গঠনসহ নানা নির্বাচনী প্রস্তুতি সারছেন। এ ছাড়া দলের সহযোগী সংগঠনগুলো নিজেদের মতো তৎপর রয়েছে। এমনকি আনোয়ারুজ্জামানের পক্ষে ভোট চেয়ে নৌকা প্রতীক-সংবলিত লিফলেটও দলের পক্ষ হতে ভোটারদের বিতরণ করা হচ্ছে।
এদিকে বর্তমান মেয়র আরিফুল হক চৌধুরীর তৎপরতা খুব একটা দেখা না গেলেও প্রতিদিনই তিনি বিভিন্ন ওয়ার্ডে সিটি করপোরেশনের উন্নয়নমূলক কাজ পরিদর্শন থেকে শুরু করে বিভিন্ন সামাজিক ও পেশাজীবী সংগঠনের অনুষ্ঠানে যোগ দিয়ে বক্তব্য রাখছেন। এসব কর্মসূচিতে সিটি নির্বাচন নিয়ে আকারে-ইঙ্গিতে কথাও বলছেন। আরিফুলের ঘনিষ্ঠ একটি সূত্রের দাবি, বিএনপি নির্বাচনে অংশ না নিলেও দলটির মনোনয়নে গত দুটি নির্বাচনে মেয়র নির্বাচিত হওয়া আরিফুল হক স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে নির্বাচনে অংশ নিতে পারেন।
এ বিষয়ে আরিফুল হক চৌধুরী বলেন, ‘নির্বাচনের আগেই প্রশাসনের মাধ্যমে বিএনপির নেতা-কর্মীদের ধরপাকড় করে একটা ভয়ভীতির পরিবেশ সৃষ্টির চেষ্টা চলছে। তবে আমি নির্বাচনে প্রার্থী হব, কি হব না, এ নিয়ে ২০ মে বেলা আড়াইটায় নগরের রেজিস্ট্রারি মাঠে জনসভা করে সুস্পষ্ট করব।’
জাতীয় পার্টির মেয়র পদপ্রার্থী নজরুল ইসলাম বাবুল ও ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের মনোনীত মেয়র পদপ্রার্থী মাহমুদুল হাসান প্রতিদিনই একাধিক কর্মসূচিতে অংশ নেন। তাঁরাও গতকাল একাধিক কর্মসূচিতে অংশ নিয়ে কুশল বিনিময়ের আড়ালে ভোটারদের কাছে ভোট ও দোয়া চেয়েছেন।
এ বিষয়ে রিটার্নিং কর্মকর্তা ফয়সল কাদের বলেন, সম্ভাব্য প্রার্থীদের আচরণবিধি মেনে চলার অনুরোধ করা হচ্ছে। আচরণবিধি অমান্যকারী ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। প্রতীক বরাদ্দের আগে কোনো প্রার্থী যেন নির্বাচনী প্রচারণা না চালান, সে বিষয়ে অনুরোধ জানানো হচ্ছে।