মহান শহীদ দিবস ও আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস উপলক্ষে দিনাজপুরের হিলি সীমান্তের শূন্যরেখায় বাংলাদেশ ও ভারতের কয়েকটি সংগঠনের উদ্যোগে আলোচনা সভা ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান হয়েছে। আজ মঙ্গলবার বেলা ১১টা থেকে হিলি সীমান্তের ইমিগ্রেশন চেকপোস্ট-সংলগ্ন বাংলাদেশ মুক্তিযোদ্ধা সংসদ হাকিমপুর উপজেলা কমান্ড কার্যালয় চত্বরে এ অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। অনুষ্ঠানটি দুই দেশের বাংলাভাষীদের মিলনমেলায় পরিণত হয়।
এর আগে আজ সকালে ভারতের দক্ষিণ দিনাজপুর জেলার বালুরঘাটের উজ্জীবন সোসাইটি, বালুরঘাট রেইনবো কালচারাল একাডেমি, সাপ্তাহিক উত্তরের রোববার ও বালুরঘাট-হিলি-বাংলাদেশ-মেঘালয় জয়েন্ট মুভমেন্ট করিডর কমিটির ১৪ সদস্যদের একটি দল শূন্যরেখা দিয়ে বাংলাদেশে প্রবেশ করে। এ সময় বাংলাদেশ মুক্তিযোদ্ধা সংসদ হাকিমপুর উপজেলা কমান্ড, হাকিমপুর পৌরসভা ও সাপ্তাহিক আলোকিত সীমান্তের একটি প্রতিনিধিদল ভারত থেকে আসা অতিথিদের ফুলেল শুভেচ্ছায় বরণ করে নেয়।
বেলা ১১টার দিকে বাংলাদেশ মুক্তিযোদ্ধা সংসদ হাকিমপুর উপজেলা কমান্ড কার্যালয় চত্বরের অস্থায়ী শহীদ মিনারের বেদিতে দুই বাংলার বিভিন্ন সংগঠন পুষ্পস্তবক অর্পণ করে শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদন করেন। পরে হাকিমপুর মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডের সাবেক কমান্ডার লিয়াকত আলীর সভাপতিত্বে আলোচনা সভায় বক্তব্য দেন উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান হারুন উর রশিদ, ভাইস চেয়ারম্যান শাহীনুর রেজা, সাবেক মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডার লিয়াকত আলী, হাকিমপুর উপজেলা আওয়ামী লীগের মুক্তিযোদ্ধাবিষয়ক সম্পাদক সামসুল আলম মণ্ডল, ভারতের উজ্জীবন সোসাইটির সাধারণ সম্পাদক সূরজ দাস, রেইনবো কালচারাল একাডেমির পরিচালক শুভংকর রায় প্রমুখ।
আলোচনাসভা শেষে ওপার বাংলার সংগীতশিল্পী মাধব রঞ্জন, রেইনবো কালচারাল একাডেমির শিশুশিল্পী অনন্যা পাহান ও শুভংকর রায় নৃত্য পরিবেশন এবং বাংলাদেশের হিলির শিল্পী জাহিদুল ইসলাম কবিতা আবৃত্তি করেন।
ভারতের উজ্জীবন সোসাইটির সাধারণ সম্পাদক সূরজ দাস বলেন, ‘আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস উদ্যাপন ও ভাষাশহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা জানাতে ভারত থেকে আমরা ১৪ সদস্যের একটি দল বাংলাদেশে এসেছি। বিভেদের বেড়া মুছে গিয়ে সম্প্রীতির বার্তা ছড়িয়ে পড়ুক—এটাই প্রত্যাশা। ভাষাশহীদদের শ্রদ্ধা জানাতে প্রতিবছরই আমরা ভারত-বাংলাদেশের শূন্যরেখায় মিলিত হই। আমরা ভাষায় এক, মননে এক। এ জন্য ভাষাশহীদদের শ্রদ্ধায়, স্মরণে-বরণে ও মননে এ দিবস পালন করি। আমরা চাই, বাংলা ভাষা ভবিষ্যতে সারা পৃথিবীকে পথ দেখাবে।’
হাকিমপুর উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান হারুন উর রশিদ বলেন, দুই বাংলার মানুষকে সীমান্তরক্ষী বাহিনী কাঁটাতারের বেড়া দিয়ে আলাদা করে রাখলেও বাংলাভাষীদের মন ও ভালোবাসাকে কখনোই আলাদা করা যাবে না। দুই বাংলার মানুষের ভালোবাসা ও হৃদয়ের বন্ধন চির–অটুট থাকবে।